০৫। সূরা মায়িদাহ, আয়াত ৮৩ থেকে ১২০
আবিসিনিয়ার খ্রিষ্টান বাদশা নাজ্জাশি এবং তাঁর কতিপয় প্রতিনিধি কুরআন শুনে বুঝতে পারেন এটি আল্লাহর কালাম। তাঁদের চোখের পানি বেরিয়ে আসে। এঁদের প্রশংসা করে আয়াত নাযিল হয়।
হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল বানাতে নিষেধ করা হয়। কসমের কাফফারা সংক্রান্ত বিধান বলা হয়। মদ, জুয়া, লটারি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে এগুলোর অপকারিতা বর্ণিত হয়।
ইহরাম অবস্থায় শিকার করা, সামুদ্রিক খাবার ও স্থলের খাবার খাওয়ার বিধান বর্ণিত হয়েছে। অপবিত্র বস্তুর আধিক্য দেখেই সেগুলোকে পবিত্র না ভাবতে আদেশ করা হয়।
আল্লাহর নাযিলকৃত সহজ বিধানগুলো নিয়ে খুঁটিনাটি প্রশ্ন করে জটিলতা বাড়াতে নিষেধ করা হয়। পূর্বের কিছু জাতি এরকম অতিরিক্ত প্রশ্ন করত, ফলে সেগুলোর জবাবে ওয়াহী নাযিল হয়ে বিধানগুলো এত কঠিন হয়ে যেত যে তারা নিজেরাই তা আর পালন করতে চাইত না।
ওসিয়ত করা সংক্রান্ত কিছু বিধান বর্ণিত হয়।
কিয়ামত দিবসে সকল নবী (আঃ) সাক্ষ্য দেবেন যে, তাঁরা কেউই নন বরং একমাত্র আল্লাহই গায়েবের জ্ঞান রাখেন।
হাওয়ারীগণ (ঈসা আঃ এর সাহাবা) ঈসা (আঃ)-কে বলেছিলেন আল্লাহর কাছে দু’আ করে মু’জিযাস্বরূপ আসমান থেকে একটি মায়িদাহ (খাবারের দস্তরখানা) নাযিল করতে। এরকম মু’জিযার ফরমায়েশ করা সাধারণত কাফিরদের স্বভাব হলেও হাওয়ারীদের নিয়ত ছিলো ভিন্ন। তাঁরা এই আসমানী দস্তরখানা দেখে এবং তা থেকে খেয়ে ঈমানকে মজবুত করতে চেয়েছেন। আল্লাহ তা নাযিল করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং সাবধান করে দেন এরপর আর কুফরি করার সুযোগ নেই। অতঃপর কিয়ামাতের দিন ঈসা (আঃ)-কে সেসব মু’জিযার কথা স্মরণ করানো হবে, যা তিনি আল্লাহর নির্দেশে করতেন। তারপর জিজ্ঞেস করা হবে তিনি নিজেকে ও তাঁর মা-কে উপাস্য বানানোর কথা প্রচার করতেন কিনা। ঈসা (আঃ) তা অস্বীকার করবেন। ফলে তাঁকে ও মারইয়াম (আঃ)-কে উপাস্য মানা লোকেরা আযাবের উপযোগী হয়ে যাবে।
০৬। সূরা আন'আম
সূরা আন'আমের শুরুতে সমগ্র সৃষ্টিজগতজুড়ে আল্লাহর ক্ষমতা ও জ্ঞানের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। কাফিরদের ঈমান আনতে বললে তারা সবসময় অলৌকিক জিনিস দেখতে চাইতো। কিন্তু এসব দেখলেও ঈমান আনতো না, বলত এগুলো স্রেফ জাদু (জাদু ও মু’জিযার পার্থক্য হলো, জাদুতে কেবল চোখের বিভ্রম ঘটে কোনো জিনিসকে অলৌকিক মনে হয়, আর মু’জিযার ফলে বাস্তবিকই কোনো অতিপ্রাকৃত ঘটনা ঘটে)। মানুষ-নবীর বদলে ফেরেশতা আসলো না কেন এ নিয়ে তারা আপত্তি তুলত। অথচ ফেরেশতা আসলে তো এমন আকৃতি নিয়েই আসতো যা মানুষের দৃষ্টিসীমায় দেখা যায়। ফলে এটাকেও তারা অস্বীকার করার একটা না একটা অজুহাত খুঁজে নিত। আর এরকম নিদর্শন আসে শেষ সুযোগ হিসেবে। তখন কুফরি করলে একেবারেই সর্বনাশ। পূর্বে তুলনামূলক শক্তিশালী, প্রতিষ্ঠিত এবং অনুগ্রহপ্রাপ্ত বহু জাতী তাদের পাপের কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে।
আহলে কিতাবরা মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে কিতাবে বর্ণিত সেই নবী হিসেবে ঠিকই চিনতে পারছে, যেভাবে তারা চেনে নিজ সন্তানদের। তারপরও তারা অস্বীকার করছে।
মুশরিকরা আল্লাহর কালাম শুনে এগুলোকে আদিকালের উপাখ্যান বলে ঠাট্টা করে। আখিরাতে তারা বিশ্বাস করে না। কিয়ামাতের দিন তারা দুনিয়ায় শির্ক করার কথা প্রথমে অস্বীকার করে বসবে। পরে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পর পুনরায় পৃথিবীতে পাঠানোর আবেদন করবে যাতে এবার ভালো কাজ করে আসতে পারে। আল্লাহ জানিয়ে দেন যে আবার পৃথিবীতে পাঠালে সেই একই কাজই তারা করত।
রাসূলকে (সাঃ) বলা হয় কাফিরদের কুফরের কারণে অতিরিক্ত মনঃপীড়া না পেতে। পূর্বেকার অনেক জাতিই নবীদের অবাধ্যতা করে ধ্বংস হয়েছে। তাদেরকে সংকট ও প্রাচুর্য উভয় অবস্থা দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। পরে আযাব দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। কখনো কখনো অবাধ্যদের দুনিয়াবি সুখ-ভোগের সুযোগ আল্লাহ বাড়িয়ে দেন যেন আরও কঠোরভাবে তাদেরকে পাকড়াও করা যায়।
মক্কার মুশরিকরা বলত মুহাম্মাদ (সাঃ) নবী হলে তাঁর কাছে আল্লাহর ধনভাণ্ডার নেই কেন, ফিরিশতা তাঁর সাথে ঘোরে না কেন। তাদের ধারণা খণ্ডন করে বলা হয় নবী হওয়ার অর্থ এই না যে এসব প্রাচুর্য সাথে নিয়ে ঘোরাফেরা করতে হবে, গায়েব জানতে হবে। নবীর দায়িত্ব কেবল আল্লাহর বাণীসমূহ পৌঁছে দেওয়া।
মক্কার বড় বড় নেতারা মুহাম্মাদ (সাঃ) এর আশেপাশে গরীব লোকদের দেখে হাসাহাসি করত। বলতো, আল্লাহ অনুগ্রহ করার জন্য তাদের মতো হোমরাচোমরাদের ফেলে এদেরকেই খুঁজে পেলেন! অথচ যারা ঈমান আনে, তারা গরীব হলেও ওইসব সম্ভ্রান্ত অহংকারীদের চেয়ে ভালো।
যেই আযাবের ভয় দেখানো হয়, তা নিয়ে আসার জন্য কাফিররা চ্যালেঞ্জ করত। তাদের জানিয়ে দেওয়া হয় যে তা কখন, কীভাবে আসবে তা রাসূল (সাঃ) এর হাতে নয়, বরং আল্লাহরই এখতিয়ারে।
বিপদে পড়লে কাফির মুশরিকরাও যে অন্য সব দেবদেবীদের ভুলে গিয়ে চুপিসারে আল্লাহর কাছেই সাহায্য চায়, তা উন্মোচন করা হয়েছে বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে। তারপরও বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার পর তারা শির্ক করে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মানুষের নিজেদের মধ্যকার যুদ্ধগুলো যেকোনো সময় আযাব হিসেবে চলে আসার ভয় দেখানো হয়।
ধর্মকে খেলতামাশার বস্তু বানানো এসকল মুশরিক থেকে দূরে থাকতে বলা হয়। তবে দাওয়াহ দিতে হবে এই আশায় যে তারা সুপথ পাবে।
শয়তান কীভাবে এদেরকে নিজ 'হিদায়াত' (পথ) এর দিকে ডেকে উদ্ভ্রান্ত করে দেয়, তা উপমা আকারে দেখানো হয়েছে। আল্লাহ প্রদত্ত হিদায়াতই আসল হিদায়াত।
কিয়ামাত সংঘটিত হওয়া কেবল আল্লাহর একটি হুকুমের ব্যাপার। তিনি বলবেন 'হও', আর তা হয়ে যাবে।
ইবরাহীম (আঃ) এর পিতা আযার ছিলো মূর্তিপূজক। বরং পুরো সম্প্রদায়ই এরকম ছিলো। ইবরাহীম (আঃ) এগুলোর অসারতা বুঝতে পারেন। নক্ষত্র, চাঁদ, সূর্য উপাস্য হতে পারে কিনা এ নিয়ে চিন্তাভাবনার পর তিনি এক আল্লাহর উপাসনায় মনস্থির করেন। তাঁর সম্প্রদায় তাঁর সাথে বাদানুবাদে লিপ্ত হয়। তিনি জানিয়ে দেন যে তারাই যখন মিথ্যা উপাস্যের মোকাবেলায় আল্লাহকে ভয় করছে না, তখন তাঁর কী কারণ থাকতে পারে যে তিনি আল্লাহর মোকাবেলায় এসব মিথ্যা উপাস্যদের ভয় করবেন। এরপর অন্যান্য কয়েকজন নবীর কথা বলা হয়। এঁরা সবাই বিশুদ্ধ তাওহীদের দিকে হিদায়াতপ্রাপ্ত ছিলেন। ইবরাহীমের বংশধর হিসেবে গর্ব করা আরব মুশরিকরা এখন চাইলে হিদায়াত গ্রহণ করুক, অন্যথায় ক্ষতিগ্রস্ত হোক। মুহাম্মাদ (সাঃ) তো তাদেরকে ইসলাম গ্রহণ করানোর মাধ্যমে কোনো দুনিয়াবি পারিশ্রমিক চাচ্ছেন না, অর্থাৎ তাঁর কোনো স্বার্থ এখানে নেই।
রাসূলকে (সাঃ) অস্বীকার করতে গিয়ে কিছু আহলে কিতাব বলে বসে যে আল্লাহ কোনো কিতাব নাযিল করেন না। তাদের গোমর ফাঁস করে বলা হয় যে মূসা (আঃ) এর প্রতি নাযিলকৃত কিতাবে তারা বিশ্বাস করে, সেই সাথে এর অনেক অংশ নিজেদের সুবিধামতো বিকৃত করে ও লুকিয়ে রাখে।
সৃষ্টিজগতের বিভিন্ন জিনিসের উদাহরণ দিয়ে দেখানো হয় আল্লাহ কীভাবে প্রাণ সৃষ্টি করেন, মৃতকে পুনর্জীবিত করেন। চিন্তাশীলদের এগুলো নিয়ে চিন্তা করার জন্য বলা হয়।
মুশরিকদের কেউ কেউ জিনদেরকে আল্লাহর সাথে শরীক করত, কেউ ফেরেশতাদের আল্লাহর কন্যা ভাবত, খ্রিষ্টানরা ঈসা (আঃ)-কে আল্লাহর পুত্র ভাবে। এসব ভুল ধারণা খণ্ডন করা হয়। আল্লাহ কোনোকিছুর জন্মদাতা নন, বরং স্রষ্টা। জন্মদানের মাধ্যমে বংশবিস্তারের প্রয়োজন তাদেরই থাকে যারা সত্ত্বাগতভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।
আল্লাহ চাইলে সবাইকে জোরপূর্বক ঈমানদার বানিয়ে দিতেন। কিন্তু পরীক্ষার জন্য তাদের সকলকে স্বাধীন বোধবুদ্ধি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এরা ঈমান না আনলে অতিরিক্ত দুঃখ পেতে নিষেধ করা হয়। তাদের উপাস্যকে গালি দিতে নিষেধ করা হয়, নাহলে তারা অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে গালি দেবে।
মুহাম্মাদ (সাঃ) নিজে কুরআনের মতো রচনাশৈলী রপ্ত করেছেন, এমন আজগুবি দাবি করতে কাফিররাও সাহস পেতো না। তাই তাদের কেউ বলতো যে অন্য কেউ তাঁকে এসব শিক্ষা দিয়েছে। অন্যত্র এ দাবি খণ্ডন করা হয়েছে।
কাফিররা জোরালো কসম করে বলে মু’জিযা দেখলে তারা ঈমান আনবে। অথচ কুরআন শুনেই তারা ঈমান আনতে পারেনি, অন্য কোনো নিদর্শন দেখলেও এভাবেই মুখ ফিরিয়ে নেবে। পূর্বেকার নবীদের সাথেও কাফিররা এমন আচরণই করেছিল, অথচ তারাও মনে মনে বুঝত যে এগুলো আল্লাহর কালাম।
অধিকাংশ মানুষ যে মত-পথ অনুসরণ করে, তা অন্ধভাবে অনুসরণ করতে নিষেধ করা হয়।
মুসলিমরা জবাই করা ছাড়া অন্য মৃত পশু খেত না। কাফিররা ঠাট্টা করতে যে, আল্লাহ যাকে হত্যা করলেন তা তোমরা খাও না, আর নিজ হাতে হত্যা করা জিনিস খাও, এটা আবার কেমন ধর্ম? আল্লাহ এ ধারণা খণ্ডন করে দেন যে হালাল-হারাম নির্ধারণের এখতিয়ার আল্লাহর, তিনি যা ইচ্ছা হালাল-হারাম করবেন। আল্লাহর নাম না নিয়ে জবাই করা পশু খেতে নিষেধ করা হয়।
কাফিররা দাবি করত তাদের ওপরও ওয়াহী নাযিল হলে পরে তারা ঈমান আনবে। তাদের এই মিথ্যা দাবিকে তিরস্কার করা হয়। জিন শয়তান ও মানুষ শয়তানেরা কীভাবে কিয়ামাতের দিন নিজের দোষ স্বীকার করতে বাধ্য হবে, তার চিত্র তুলে ধরা হয়। সত্যের ব্যাপারে অবহিত করা ছাড়া কাউকে শাস্তি দেয়া আল্লাহর রীতি নয়। তাই উভয় জাতির মাঝেই নবী-রাসূলগণ যথাযথভাবে দাওয়াতি কাজ করেছেন। অস্বীকারকারী জিন ও মানুষেরা কিয়ামাতের দিন নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হবে।
মুশরিকরা কিছু মনগড়া হালাল-হারাম মেনে চলত। তারা আল্লাহর জন্য যেমন কুরবানী করত, তাদের অন্য উপাস্যদের জন্যও করত। তবে কখনোকখনো আল্লাহর জন্য নির্ধারিত পশু বা শস্যের সাথে অন্য পশু বা শস্যকে গুলিয়ে ফেললেও, অন্যান্য উপাস্যদের জন্য যা আলাদা করে রাখতো তাতে কখনোই হেরফের করত না। কিছু পশুর পিঠে চড়া হারাম মানতো, কিছু পশুর বাচ্চা হলে সেটা পুরুষরা খাবে, না নারীরা খাবে তা ঠিক করত, নিজেদের সন্তান হত্যা করাকে অভাব দূর করার ভালো উপায় ভাবত। এসব রসম-রেওয়াজ খণ্ডন করে প্রকৃত হালাল-হারামের কিছু বিধান বর্ণনা করা হয়। পূর্বের উম্মাতদের অবাধ্যতার জন্য তাদের ওপর কিছু অতিরিক্ত বস্তু হারাম করা হয়েছিল।
সেসময়কার কাফিররাও এমন কথা বলত যে, আল্লাহ না চাইলে তো আমরা শির্ক করতাম না, আল্লাহ চাচ্ছেন বলেই আমরা শির্ক করি। এসকল কথা বলে তারা নিজেদের ভ্রান্তির ওপর অটল থাকত।
অতঃপর এমন কিছু কাজের কথা বলা হয় যা মনগড়া রসম-রেওয়াজ নয়, প্রকৃতই সাওয়াবের কাজ। শির্ক না করা, পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার, দারিদ্র্যের ভয়ে সন্তান হত্যা না করা, গোপন ও প্রকাশ্য অশ্লীলতার কাছেও না যাওয়া, অন্যায় হত্যা না করা, ইয়াতীমের দেখভাল, মাপে কমবেশি করে লোক না ঠকানো, নিকটাত্মীয়ের বিরুদ্ধে গেলেও ন্যায়বিচার করা।
কুরআন নাযিল করে অজুহাতের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নাহয় মুশরিকরা বলতো ইহুদী-খ্রিষ্টানরা তাদের কিতাব আমাদের শিক্ষা দেয়নি তাই হিদায়াত পাইনি, অথবা আমাদের ওপর কিতাব নাযিল হলে আমরাই বেশি হিদায়াত পেতাম। অথচ কুরআন নাযিল করার পরও তারা অজুহাত দিচ্ছে। নতুন নতুন মু’জিযা দেখতে চাইছে। অথচ এসকল মু’জিযা তো শেষ সুযোগ হিসেবে আসে, যা অস্বীকার করলে সরাসরি আযাব পেতে হয়। প্রতিটি সৎকাজের প্রতিদান দশগুণ সওয়াব, প্রতিটি পাপের বিনিময় একটি করে গুনাহ। একনিষ্ঠভাবে ইবরাহীম (আঃ) এর দ্বীনের অনুসারী হতে বলা হয়, যিনি মুশরিক ছিলেন না। জীবন, মৃত্যু, শারিরীক ইবাদত, আর্থিক ইবাদত সবই হতে হবে আল্লাহর জন্য, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।