দিন শেষে সবাই ঘরে ফিরে
পাখি ফিরে তার আপন নীড়ে
আর আমি ফিরি তোমাতে,
সব দিক হতে মুখ ফিরায়ে
নিজেকে পূর্ণ সমর্পণ করি তোমার রাহে,
তোমার নৈকট্যের তালাশে সিজদাবনত হই
শেষ রাতে কিম্বা ঊষালগ্নের পূর্বে।
হৃদয়ের সমস্ত আবেগ নিংড়ে ক্বিবলামুখী হই
সিরাতুল মুস্তাকিমের প্রত্যাশায়
পড়ি উম্মুল কুরআন,
যা বারবার পড়া হয়
নামাজের ভিতরে ও বাইরে।
তারপর চোখের সামনে মেলে ধরি
পৃথিবীর সর্বশেষ ঐশী কিতাব,
যে কিতাবে একে একে বলা হয়েছে
আদম থেকে শুরু করে পৃথিবীর সর্বশেষ মানুষের কথা,
যার ছোঁয়ায় বদলে গিয়েছিল
আরবের জাহেল লোকেরা,
যে কিতাবের প্রাণশক্তির স্ফূরণ ঘটেছিল
বদর, ওহুদ হয়ে তাবূকের প্রান্তরে।
যে পবিত্র গ্রন্থের মর্মবাণী বুঝে ঘুমহীন রাত কাটায়
অর্ধ জাহানের খলিফা,
ফোরাত পাড়ের অভুক্ত কুকুরের চিন্তায়
কেঁপে উঠে যার অস্থির হৃদয়।
আমি সেই কিতাব বুকে চেপে ধরে
ঘর থেকে বের হয়ে আসি,
দুপুরের কড়া রোদ মাথায় নিয়ে
রাজপথে মিছিলে নামি,
সত্য-মিথ্যার ফারাক ঘুচাতে জড়িয়ে পড়ি
অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘাতে,
বুলেট ও বারুদের আলিঙ্গনে নির্লিপ্ত শরীর
নৈ:শব্দের নগরীতে আমার অক্ষমতা জানান দেয়।
হঠাৎ সুবহে সাদিকের মত
আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে
খেজুর পাতার ছাউনি দেয়া মদীনার সবুজ মসজিদ,
যেখানে তোমার স্মরণে মশগুল একদল আসহাব
স্নিগ্ধ গোলাপের মত যাদের আত্মা প্রস্ফুটিত হয়
তৌহিদের প্রেমে,
আমি কুরআনকে বুকে ধরে
বঙ্গোপসাগরের উপকূলে
কৃষকের ঘামে-শ্রমে সবুজ হয়ে ওঠা দেশে
তাদের রেখে যাওয়া পতাকা নতুন করে তুলে নেই,
ফেরদৌস জান্নাত হতে আসা হাওয়ার ঝাপটায়
তো্মার তৌহিদের নিশান পতপত করে উড়তে থাকে,
আর আমার দু’চোখে নেমে আসে প্রশান্তির ঘুম
বদরের সকালে যে প্রশান্তি নেমেছিল রাসূলের কাফেলায়।